Friday , 3 May 2024
সংবাদ শিরোনাম

নিজেদের দোষেই ডুবল ব্রাজিল!

বিশ্বকাপের আগে থেকে ব্রাজিলের যে অপ্রতিরোধ্য বিজয়রথ ছুটতে শুরু করেছিল, তার রাশ টেনে ধরল বেলজিয়াম। ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে দিয়ে ফুটবল ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় শুরু করল বেলজিয়াম।

এবারের বিশ্বকাপে একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। ফেভরিট হিসেবে যে কাউকেই এগিয়ে রাখা যাচ্ছে না। আবার কোনো দলকে আন্ডারডগ তকমা দেওয়ার ভুলও করা যাবে না। এবার একে একে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে জার্মানি, আর্জেন্টিনা, স্পেনের মতো তথাকথিত বড় দলগুলি। গতকাল ছিটকে গেল ব্রাজিলও। অতএব এবার বিশ্বকাপ যদি কোনো নতুন দলকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পায়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

কাজান এরিনায় বেশ গতির সাথেই খেলেছে বেলজিয়াম। নিজেদের শক্তির বিষয়ে বেশ ভালই ওয়াকিবহাল তারা। প্রতি আক্রমণে বারবার কামাল করেছে মার্টিনেজের দল। এবারো তাকেই কাজে লাগালো। লুকাকু সোলো রানে ডি ব্রুইনের কাছে বল পৌঁছে দিলেন। আর সেখান থেকেই দুর্দান্ত একটি গোল। তখনই যেন ইঙ্গিত মিলেছিল, ম্যাচের ভাগ্য কোন দিকে গড়াচ্ছে। বড় দলের বিরুদ্ধে যেভাবে নার্ভ ধরে রেখে খেললেন মার্টিনেজের ছেলেরা, তা দেখে অনুপ্রেরণা পাবে বাকি দলগুলিও।

এসকোবারের আত্মঘাতী গোলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল কলম্বিয়াকে। ক্ষুব্ধ দেশবাসীর হাতে গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছিল তাকে। কিন্তু ফার্নান্দিনহো গতকাল নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন তো? রাতে ঘুমাতে পারবেন তো তিনি?

মাঠে নামার আগে থেকেই হুঙ্কার দিচ্ছিলেন তিনি। ক্যাসেমিরোর অভাব পূরণ করে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে হল উলটোটা। অভাব তো দূর, তার আত্মঘাতী গোলে শুরুতেই অক্সিজেন পেয়ে গেলেন হ্যাজার্ডরা। আত্মবিশ্বাসী দল তখন টগবগিয়ে এগিয়ে চলেছে নতুন ইতিহাস রচনা করতে।

এই ব্রাজিলই কি মেক্সিকোর বিরুদ্ধে দুর্দান্ত একটা পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল? সার্বিয়াকে পরাস্ত করে দলগত দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছিলেন এই তারকারাই? বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে প্রথমার্থ দেখার পর অন্তত এসব প্রশ্নই মনে ঘোরাফেরা করবে। কারণ তিতের ছেলেদের এদিনের খেলার সঙ্গে সেসবের কোনো সামঞ্জস্যই নেই। উইলিয়ান, জেসুসরা শুধু দর্শক হয়েই রয়ে গেলেন। বক্সের কাছে বারবার স্কিল প্রদর্শন করতে গিয়ে খেলার গতিই স্লথ করে দিলেন নেইমার। আর তাতেই সুন্দরভাবে ডিফেন্স সাজানোর সময় পেয়ে গেল বেলজিয়াম। যেটুকু পরিশ্রম করলেন, একা মার্সেলোই। তবে বল বাড়িয়ে তিনিই যে তা রিসিভ করবেন, এমনটা তো সম্ভব নয়।

গতকাল ফিনিশিংয়ের অভাবটা প্রকট হয়ে উঠল ব্রাজিলের। দ্বিতীয়ার্ধে লাগাতার আক্রমণ শেষে খোলে গোলমুখ। কুটিনহোর পাস থেকে দারুণ হেডারে গোল করে খেলায় উত্তেজনা ফেরালেন আগুস্তো। কিন্তু এদিনটাই যেন ব্রাজিলের ছিল না। না হলে নেইমার, কুটিনহোরা এত সহজ সুযোগ মিস করতেন না।

এ বিশ্বকাপ যেমন একে একে কেড়ে নিচ্ছে চিরাচরিত হট ফেভরিটদের, ঠিক তেমনই জন্ম দিল নতুন তারকাদের। খোঁজ দিল ফুটবল মানচিত্রে শক্তিশালী দেশের। তাই শুধুই যন্ত্রণা নয়, এ বিশ্বকাপ উজ্জ্বল আগামীর বার্তাও দিচ্ছে জোর গলায়। তাই তো নামজাদারা বিশ্বকাপের রং ফিকে করে দিলেও ফুটবলপ্রেমীরা রাত জাগবেন ফ্রান্স ও বেলজিয়াম লড়াই দেখতে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top