Monday , 13 May 2024
সংবাদ শিরোনাম

আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের জামিন বহাল

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের দায়ের করা অর্থ পাচারের পাঁচ মামলার মধ্যে তিন মামলায় আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে তিন মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিকদের হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবীরা।

আজ সোমবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো: আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

জামিন পাওয়া আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক হলেন— দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ। আপিল বিভাগের আদেশের ফলে আপন জুয়েলার্সের দুই মালিক গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের মুক্তিতে বাধা নেই। তবে আরও দুই মামলায় জামিন না হওয়ায় দিলদার আহমেদ জামিনে মুক্ত হতে পারবে না।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আসামিদের জামিন স্থগিত রাখার বিষয়ে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু। আপন জুয়েলার্সের তিন মালিকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।

এ বিষয়ে মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর ওই তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় মোট পাঁচটি মামলা করেছিল। এর মধ্যে গুলশান থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে। ওই দুটি মামলায় তাদের জামিন বহাল রয়েছে। ফলে এ দুজনের মুক্তিতে বাধা নেই।

আর দিলদার আহমেদের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রমনা থানার মামলার মামলায় হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বহাল থাকলেও বাকি দুই মামলায় জামিন শুনানি এক মাসের জন্য মুলতবি থাকায় আপাতত তার মুক্তি হচ্ছে না বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

এর আগে, গত ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, রমনা ও উত্তরা থানায় শুল্ক গোয়েন্দার দায়ের করা পাঁচ মামলার মধ্যে তিন মামলায় দিলদার আহমেদসহ আপন জুয়েলার্সের মালিকদের জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাকি দুই মামলা মূলতবি রাখেন আদালত। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

হাইকোর্টে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহবুব মোর্শেদ।

হাইকোর্টের শুনানির পর ইউসুফ মাহবুব মোর্শেদ বলেছিলেন, ‘আদালত পাঁচ মামলার মধ্যে আসামিদের তিনটিতে জামিন দিয়েছেন। তবে বাকি দুই মামলা মূলতবি রেখে একমাস পর শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাই এখন এই মামলার আসামি দিলদার আহমেদ ছাড়া বাকি দুই আসামি জামিনে মুক্ত হতে পারবেন।’

এর আগে, গত ২২ নভেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন থানায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের দায়ের করা অর্থপাচার মামলায় আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে কেন জামিন দেওয়া হবে না— তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওইদিন পৃথক পাঁচটি আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। রুলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন দেন। তবে গত ১৮ ডিসেম্বর আসামিদের সেই জামিন আদেশ স্থগিত চাওয়া হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিদের জামিন স্থগিত রাখা হয়। গত ২১ ডিসেম্বর পুনরায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই স্থগিতাদেশ আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এরপর ফের আপন জুয়েলার্সের মালিকদের জামিন আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত স্থগিত রাখেন আপিল বিভাগ। এ বিষয় পূর্ণাঙ্গ শুনানি নিয়ে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের হাইকোর্টে দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিলেন আপিল বিভাগ।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top