Monday , 29 April 2024
সংবাদ শিরোনাম

অপরিপক্ব তরমুজে বাজার সয়লাব, দামও চড়া

রমজান মাস ঘিরে এরইমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে রসাল ফল তরমুজ। তবে এখনও পরিপূর্ণ মৌসুম শুরু না হওয়ায় বাজারে ওঠা তরমুজ অপরিপক্ব আবার দামও বেশ চড়া।

সোমবার (১৮ মার্চ) বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য ফলের পাশাপাশি বাজারে ছোট ও মাঝারি আকারের তরমুজ খুচরা পর্যায়ে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তরমুজ ৮৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

জানা যায়, মৌসুমির প্রথম তরমুজের চালান আসছে বরিশাল-কুয়াকাটা-সিলেটসহ অন্যান্য জেলা থেকে। বরিশালের তরমুজের ওজন ৬ থেকে ৮ কেজি হয়ে থাকে। আর পাহাড়ে চাষ হওয়া তরমুজের ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি। এসব চালান রাজবাড়িসহ আশপাশের উপজেলায় বেশি আসে, সেখান থেকে যায় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে।

রিয়াদ নামের এক তরমুজ বিক্রেতা জানান, এখন মাত্র ২-৪টি তরমুজের গাড়ি আড়তে আসছে।

মূলত দক্ষিণাঞ্চল থেকে এসব তরমুজ আসছে। বিক্রেতারা এগুলোকে বলছেন, বাংলালিংক ও কালো জাতের তরমুজ। সেসব তরমুজের বেশিরভাগই অপরিপক্ব ও আধা পাকা। এসব তরমুজ কাটার পর কোনটির রং লাল-সাদা আবার কোনটির রং লাল।

কিছু তরমুজের স্বাদ মিষ্টি হলেও, বেশিরভাগই পানসে। বাজারে ওঠা বেশিরভাগ তরমুজ অপরিপক্ব হলেও চাহিদা কম নয়। অনেক ক্রেতাকেই তরমুজ কিনতে দেখা গেছে।

মূলত, রমজানকে ঘিরে বাড়তি লাভের আশায় অনেক কৃষক পরিপক্ব হওয়ার আগেই তরমুজ বিক্রি করে ফেলছেন।

তরমুজের দাম গতবারের তুলনায় বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বালিয়াকান্দি বাজারের ভাই ভাই ফলের আড়ৎদার রাজু ইসলাম বলেন, তরমুজের দাম গতবারের তুলনায় বেশি হওয়ার কারণে বাজারে তরমুজ ওঠা শুরু হয়েছে। এবার কৃষকের অনেক তরমুজ নষ্ট হয়েছে, যার কারণে দাম কিছুটা বেশি। এক্ষেত্রে বাজারে সরবরাহ বাড়লে দামও কমে যাবে।

হাসেম মল্লিক নামের এক ক্রেতা কালবেলাকে বলেন, সারা দিন যে টাকা ইনকাম করি সেই টাকার ইনকাম দিয়ে একটি তরমুজ কিনতে পারি না। তবে সরকার যদি এদিকে একটু নজর দিত তাহলে আমরা কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পেতাম।

রাজিব হোসেন কালবেলাকে বলেন, ৮০ টাকা কেজি দরে ২৪০ টাকা দিয়ে একটা তরমুজ কিনেছিলাম। বাসায় এনে ইফতারের আগে কেটে দেখি অপরিপক্ক। তরমুজের ভিতরে সাদা, স্বাদও ভালো না। বাজারে অপরিপক্ক তরমুজ বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে আমার মতো অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। বাজার মনিটরিং করা উচিত। অসাধু ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

তরমুজ কিনতে এসে সুব্রত বিশ্বাস নামের এক ক্রেতা কালবেলাকে বলেন, আমি একটি বেসরকারি জব করি। রোজা আছি, এজন্য তরমুজ কিনতে এসেছি। কিন্তু অপরিপক্ক তরমুজ ৮০ টাকা কেজি। একটা তরমুজ কেনার বাজেট নেই। এজন্য আজ কিনব না। রমজানে অনেক দেশে জিনিসপত্রের দাম কমে আর আমাদের দেশে বাড়ে, এটা খুবই দুঃখজনক। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে কিন্তু কমে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের কষ্ট কেউ বোঝে না।

তরমুজ ক্রেতা জয়নাল অবেদীন কালবেলাকে বলেন, বাসার সবাই রোজা আছে ইফতারের জন্য ৮০ টাকা কেজি দরে তরমুজ কিনলাম, তরমুজ এখনো পরিপক্ক না। তবুও কিনলাম তরমুজের এতো বেশি দাম জীবনেও দেখিনি। ৫ কেজি ওজনের একটা তরমুজ ৪০০ টাকায় কিনলাম। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হয়। অথচ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। জনগণের কষ্টের কথা মাথায় রেখে সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top