Sunday , 5 May 2024
সংবাদ শিরোনাম

বিশ্বের ক্ষমতাধরদের কর ফাঁকির তথ্য ফাঁস

পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির বছর না ঘুরতেই বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের আরেকটি আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস হলো। রবিবার প্যারাডাইস পেপারস নাম দিয়ে ফাঁস হওয়া ১ কোটি ৩৪ লাখ গোপন নথিতে নাম এসেছে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকারের ঘনিষ্ঠজনের।

গতবারের মতোই এবারো এই আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করেছে জার্মান দৈনিক সুইডয়চে সাইটং। ফাঁস হওয়া নথির অধিকাংশই বারমুডাভিত্তিক আইনি সহায়তাদাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলবি থেকে পাওয়া গেছে। অফশোর ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ পর্যায়ের সেবাদাতা এই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কর ফাঁকির পথ দেখিয়ে দেয়।

কর ফাঁকির ১ কোটি ৩৪ লাখ ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসকে (আইসিআইজে) দিয়েছে সুইডয়চে সাইটং। ৬৭টি দেশের ৩৮০ জন সাংবাদিক এখন এসব নথি বিশ্লেষণ করছে। প্রাথমিকভাবে নথিতে ১৮০টি দেশের নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। নথিতে দেখা গেছে, ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের ব্যক্তিগত অর্থের মধ্যে ১ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করা হয়েছে অফশোর কম্পানিতে। ডাচি অব ল্যাঙ্কাস্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব অর্থ কেমান আইল্যান্ডস ও বারমুডায় গেছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি রানির ব্যক্তিগত সম্পদের ৫০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ দেখভাল করে এবং তাকে মুনাফা প্রদান করে।

বিবিসি অবশ্য জানিয়েছে, এই বিনিয়োগে অবৈধ কিছু নেই এবং রানি কর দিচ্ছেন না বলেও এটা ইঙ্গিত করছে না। তবে রাজপরিবার অফশোর কম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত কি না সেই প্রশ্নটি তোলা যেতে পারে। গরিব ঠকানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ব্রিটিশ কম্পানি ব্রাইট হাউজেও রানির বিনিয়োগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যজুড়ে কিস্তিতে ইলেকট্রনিক, গৃহস্থালি পণ্য ও আসবাব সরবরাহ করে ব্রাইট হাউজ। এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৫ লাখ পাউন্ড কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। কর ফাঁকির এই নথিতে নাম এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রসের। নব্বইয়ের দশকে ট্রাম্পকে দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা করেছিলেন রস। প্রেসিডেন্ট হয়ে তাকে বাণিজ্যমন্ত্রী করেন ট্রাম্প।

ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, রস একটি শিপিং কম্পানি থেকে লাভের অর্থ নেন। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জামাতা ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন জ্বালানি কম্পানিকে তেল ও গ্যাস সরবরাহ করে বছরে কয়েক মিলিয়ন ডলার আয় করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের রুশ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। এ নিয়ে ইতিমধ্যে অস্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার বাণিজ্যমন্ত্রীর এই রুশ সংশ্রবের নতুন অভিযোগ সেই অস্বস্তিকে আরো বাড়িয়ে দেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ঘনিষ্ঠজন স্টিফেন ব্রনফম্যানের অফশোর কম্পানিতে লেনদেনে সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে এসেছে। ব্রনফম্যান ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টির প্রধান তহবিল সংগ্রাহক। এ ঘটনা কর ফাঁকি ঠেকাতে সোচ্চার ট্রুডোকে অস্বস্তিতর পরিস্থিতিতে ফেলবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক ডেপুটি চেয়ারম্যান ও অন্যতম অর্থদাতা লর্ড অ্যাশক্রফটের অফশোর বিনিয়োগের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা গেছে, ২০০ সালে বারমুডার পুন্টা কোরডা ট্রাস্টে কয়েক কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছিলেন অ্যাশক্রফট।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top