Saturday , 20 April 2024
সংবাদ শিরোনাম

রাজনৈতিক হলে ২০১৪ সালে খালেদা গ্রেপ্তার হতেন

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির দায়ে আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মামলাটা আমরা করিনি। রাজনৈতিক কারণে করলে আমরা ২০১৪-১৫ সালেই তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারতাম।’

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি প্রায় ১০ বছর চলেছে। বিএনপির এত জাঁদরেল জাঁদরেল আইনজীবী, কেউই আদালতে তাঁকে (খালেদা জিয়া) নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলেন না। এতেই প্রমাণিত হয় তিনি অপরাধী।

আর বিএনপি নেতারাও সেটা জানতেন। তা না হলে মামলার রায়ের আগেই দলটির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা বাদ দিয়ে দুর্নীতিবাজ, অপরাধী ও দণ্ডিতদের নেতা হওয়ার সুযোগ রাখা হলো কেন?

গতকাল বুধবার সংসদ অধিবেশনে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে এসংক্রান্ত সম্পূরক প্রশ্ন উত্থাপন করেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগম।

প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়ন, সুরক্ষাসহ যেকোনো উন্নয়নে দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, নারী মানে একজন মা। কিন্তু একজন নারী হয়ে এতিমের টাকা মেরে খাওয়া, এটা চিন্তাই করা যায় না। এটা পুরো নারী জাতির জন্য কলঙ্ক।

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা ও পুড়িয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা না থাকলে নারীরা নির্যাতিত হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো নারীদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়, পাশবিক নির্যাতন চালায়। ছয় বছরের ছোট শিশুকে পর্যন্ত গণধর্ষণ করে। দেশের এমন কোনো স্থান ছিল না, যেখানে নির্যাতন হয়নি। এ কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা ভোট পায়নি। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আন্দোলন ও নির্বাচন বানচালের নামে বিএনপি-জামায়াত নির্বিচারে নারীসহ দেশের মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সারা দেশে নাশকতা চালিয়েছে, যা নারীর ক্ষমতায়নের পথে বড় বাধা।

জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে সব দিক থেকে এগিয়ে নিতে সরকারের আরো অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ আওয়ামী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অসামান্য ভূমিকা : সরকারদলীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবদান ও তার স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় হলো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ। সন্ত্রাসবিরোধী ১৪টি আন্তর্জাতিক কনভেনশনের প্রতিটিতেই বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।’

মিয়ানমারে অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের এই উদারতা বৃহত্তর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা তথা শান্তি বজায় রাখতে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে, যা আজ সর্বজনবিদিত।’

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ : তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ লক্ষ্যে সব ধরনের সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মাদকবিরোধী অভিযান : প্রধানমন্ত্রী সংসদে জানান, গত ১৮ মে থেকে এ পর্যন্ত চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং এগুলো পরিবহনের বাহন উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে। সারা দেশে ১৫ হাজার ৩৩৩টি মামলা দায়ের, ২০ হাজার ৭৬৭ আসামিকে গ্রেপ্তার এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক হাজার ২৮৯ জনকে সাজা দেওয়ার তথ্য তুলে ধরেন সংসদ নেতা।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ পাঠানোর পরিকল্পনা : সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম নাসিমা ফেরদৌসীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মহাকাশে আরেকটি স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উেক্ষপণের পর মহাকাশে নিজেদের অবস্থানকে সমুন্নত রাখতে এই স্যাটেলাইটের আয়ুষ্কাল শেষ হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণ আওয়ামী লীগ সরকারের গতিশীল উন্নয়নের ধারাবাহিকতার অংশ। এই স্যাটেলাইটের সফল উেক্ষপণের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top