Friday , 19 April 2024
সংবাদ শিরোনাম

মেসির সাম্রাজ্য ধসিয়ে সেমিতে রোমা

ইউরোপা সেরার দৌড়ে হেভিওয়েট বার্সাকে ছিটকে দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমি ফাইনালে পৌঁছে গেল ইতালির দল রোমা৷ কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের লড়াই মেসি,সুয়ারেজরা খাতাই খুলতে পারলেন না৷ জেকো, দি রোসি ও কোস্তাসের গোলে ৩-০ বার্সাকে হারল রোমা৷

চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে রোমাকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল বার্সেলোনা৷ তাই সেমিতে যাওয়ার জন্য ইতালির ক্লাবটিকে শুধু হারালেই হতো না রাখতে হতো বড় ব্যবধান৷ একপ্রকার অসাধ্য সাধন করে মেসিদের চ্যাম্পিয়নস লিগের লড়াই থেকে ছিটকে দিয়ে সেমি ফাইনালে পৌঁছল রোমা৷ দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরাইন ৪-৪ হলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে এগিয়ে গেল রোমা।

প্রথমবারের মতো প্রথম লেগে তিন গোলের ব্যবধানে হারের ধাক্কা কাটিয়ে প্রতিযোগিতার শেষ চারে ওঠার কীর্তি গড়ল রোমা। একই সঙ্গে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠলো ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনাল খেলা দলটি।

প্রথম লেগে বিব্রতকর সব ভুলে বড় ব্যবধানে হারা রোমাকে শেষ চারের টিকেট কাটতে করতে হতো অবিশ্বাস্য কিছু। রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ার আভাসটা ম্যাচের শুরুতেই দেয় তারা। ষষ্ঠ মিনিটে দানিয়েলে দে রস্সির রক্ষণের উপর দিয়ে বাড়ানো বল বার্সেলোনা ডি-বক্সে খুঁজে পায় এদিন জেকোকে। প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দ্বিতীয় স্পর্শে জালে ঠেলে দেন বসনিয়ার এই স্ট্রাইকার।
ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় বার্সেলোনার বিপক্ষে এই নিয়ে শেষ তিন ম্যাচে তিন গোল করলেন জেকো।

এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে স্বাগতিকরা। একের পর এক আক্রমণে তারা কোণঠাসা করে ফেলে বার্সেলোনাকে। এরই মাঝে ২৯তম মিনিটে ফাঁকায় ক্রস পেয়ে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ফেদেরিকো ফাজিওর নেওয়া হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় অতিথিরা।

খানিক পর পাত্রিক সিক ছয় গজ বক্সের বাইরে ফাঁকায় বল পেয়ে শট নিতে দেরি করেন। ৩৭তম মিনিটে চেক রিপাবলিকের এই ফরোয়ার্ডের হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।

দ্বিতীয়ার্ধেও চিত্রপটে পরিবর্তন আসেনি। তার মাঝে ৫৮তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দে রস্সি। ডি-বক্সে জেকোকে ডিফেন্ডার জেরার্দ পিকে টেনে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় রোমা। হলুদ কার্ডও দেখেন স্প্যানিশ সেন্টার ব্যাক।

ম্যাচের আগে লিওনেল মেসিকে আটকে রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন রোমা কোচ। মাঠে দেখা যায় তারই প্রতিফলন। মাঝে মধ্যে পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার বল পেলেও দারুণ ট্যাকলে কেড়ে নিচ্ছিল রোমার খেলোয়াড়েরা। একরকম হতাশা থেকেই কি-না ৬৩তম মিনিটে কলোরোভকে অহেতুক পিছন থেকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন তারকা।
৭০তম মিনিটে ইতালিয়ান মিডফিল্ডার দে রস্সির হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। নয় মিনিট পর আলেস্সান্দ্রোর ফ্লোরেন্সির গোলমুখে বাড়ানো বিপজ্জনক ক্রসে কোলারভের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন টের স্টেগেন।

তবে শেষ পর্যন্ত দলকে বাঁচাতে পারেননি জার্মান গোলরক্ষক। ৮২তম মিনিটে দারুণ কোনাকুনি হেডে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলেন গ্রিক ডিফেন্ডার কোস্তাস মানোলাস। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইনে সমতা। কিন্তু পার্থক্য গড়ে দেয় কাম্প নউয়ে এদিন জেকোর করা গোলটি।

কাম্প নউয়ে আত্মঘাতী গোল করে খলনায়ক হয়েছিলেন দে রস্সি ও মানোলাস। ঘরের মাঠে গোল করে তারাই এখন নায়ক।

শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে রোমার বেঞ্চের সব খেলোয়াড়-কোচরা মাঠে ছুটে যান উৎসবে যোগ দিতে। গ্যালারিতে সমর্থকদের চোখে ছিল অশ্রু, নিজেদের অবিশ্বাস্য অর্জনটাকে যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না!
পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা এই নিয়ে টানা তিন মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়লো। সবশেষ ২০১৪-১৫ আসরে এর শিরোপা জিতেছিল তারা।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top